রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৯

অবহেলিত বয়ফ্রেন্ড

তিশা আর আরোহীর ঝগড়ায় মামুন খুব বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলো..তাই বললো কাওকে যেহে হবে না,,আমি চলে যাচ্ছি..
এই কথা বলেই মামুন চলে গেলো।।
আরোহীঃদেখো তিশা আমার আর মামুনের সম্পর্ক ৪বছরের তাই তুমি আমাদের মাঝে আসার একদম চেষ্টা করবে না..
তিশাঃভুল বলছিস তুই?কারণ রিলেশন ছিলো দুই বছর তারপর তুই মামুনকে সহ্য করতে পাড়তি না।।
আরোহীঃরিলেশনে একটু আকটু ভুল বুঝাবুঝি থাকবেই,,তাই বলে তৃতীয় কেও আসবে সেটা তো হতে পারে না..
তিশাঃহুম ঠিক বলেছিস,,তুই আমাদের মাঝ থেকে চলে যা।।
আরোহীঃআমি কেনো যাবো?আমাদের দুজনের মাঝে তুমি এসেছ তাই যদি যাওয়াও হয় তুমি যাবে..
তিশাঃআমি তো কিছুতেই যাচ্ছি না..কারণ আমি মামুনকে অনেক ভালোবাসি.
আরোহীঃকিন্তু মামুন আমাকে ভালোবাসে আর আমি মামুনকে..
তিশাঃমামুন আগে তোকে ভালোবাসত,,কিন্তু এখন আর তোকে ভালোবাসে না,,
আর মামুন অতবোকা না যে তোকে আবারর ভালোবেসে তোর সাথে রিলেশন শুরু করবে..
করবে কি করবে না সেটা আমি আর মামুন বুঝে নিবো..তোমার সাথে কথা বলার আমার কোনো ইচ্ছা নেই..আমি শুধু এই টুকু বলছি মামুনের থেকে দূরে দূরে থেকো।
তিশাঃআরে আমি কোথায় থাকবো সেটা আমি বুঝবো..এই কথা বলেই তিশা চলে গেলো..
আরোহীর পুরো শরীর জ্বলছে..কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছে না..
তিশা চলে যাবার পর আরোহী কিছু একটা নিয়ে খুব ভাবছিলো..কিন্তু হিসাব টা মিলাতে পাড়ছিলো না,,
কিছুদিন পর মামুন রাফি আর তিশা বসে আছে,,
মামুন চাইছিলো না একসাথে বসতে,,কিন্তু মামুন যখন প্রচুর কষ্টে ছিলো এই তিশাই পাশে থেকে মামুনকে সব ভুলে থাকতে সাহায্য করছিলো..তাই মামুন তিশার সাথে তেমন খারাপ ব্যাবহার করে না..
হঠাৎ একটা বাইক আসলো একটা অপরিচিত ছেলে আর আরোহী ছিলো..
তিনজন হা করে তাকিয়ে আছে,,বিশেষ করে মামুন বেশি অবাক হয়েছে..কারণ আরোহী ছেলেদের সাথে মিশলেও কোনো দিন
কোনো ছেলের কাছ থেকে লিফট নিতো না,,কিন্তু আজ আরোহীর কি হলো?একদম সোজা অপরিচিত একটা ছেলের সাথে ভার্সিটি চলে আসলো??
মামুন কিছুতেই হিসাব মিলাতে পাড়ছে না,,
আরোহী বাইক থেকে নেমে মামুনকে উদেশ্যে করে বললো আরে মামুন সাহেব অমনভাবে হা করে তাকিয়ে থেকো না,,মশা ঢুকে যেতে পারে..
অমন কিছুটা অস্বাভাবিক বোধ করলো..কিন্তু নিজেকে আবার সামলেও নিলো।
আরোহীঃআমি জানি তোমাদের সবার মাথায় একটা কথা ঘুড়ছে,,এই ছেলেটা কে?আর আমি কেনোই বা এর সাথে কলেজে আসলাম??
তাহলে সবাই শুনে নাও,,
এনি হলো আমার খালাতো ভাই,,
কিছুদিন পর এনার সাথেই আমার বিয়ে হচ্ছে..
মামুন আর রাফি কিছু না বললেও
তিশা বসা থেকে উঠে গিয়ে আরোহীকে জড়িয়ে ধরলো..আর বললো তুই আমার মায়ের পেটের বোন না,,,কিন্তু তুই আমার যে সাহায্য করলি.আমার মায়ের পেটের বোনও মনে হয় এত করতো না..
আরোহীঃআমি আবার কিভাবে সাহায্য করলাম?(অবাক হয়ে)
তিশাঃসেটা পড়ে বলবো এখন সবার সামনে বলা ঠিক হবে না,,
আরোহীঃআচ্ছা যে কারণে এখানে আসা আগামী ২৫ তারিখ আমাদের বিয়ে,,তোমাদের সবাইকে দাওয়াত,,এখন মুখে বললাম,,কিছুদিন পর কার্ড দিয়ে নিমন্ত্রণ করবো...
আর শুনো আগেই বলে রাখি নাজমুল আমাকে বিয়ের মিথ্যা নাটক করতে বলেছিলো,,কিন্তু আমি ভাবলাম মিথ্যা নাটক কেনো করতে যাবো।যে আমাকে ভালোবাসে না তার জন্য??
তার থেকে ভালো আব্বু আম্মুর কথামত কাওকে বিয়ে করে নিবো..
তাই আব্বুকে বললাম..
আচ্ছা আজ আসি
এইকথা বলে আরোহী আবার বাইকে উঠে ছেলেটাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো,,ঠিক সেই সময় মামুনের মনে হলো কেও একজন তার বুকে ছুড়ি বসিয়ে দিলো
এমন কেনো হলো মামুন সেটা নিজেও জানে না,,
মামুন কারো সাথে কোনো কথা না বলে বাসায় চলে গেলো..আরোহী বিয়ে এই কথা মনে পড়তেই মামুনের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে..
পরদিন বন্ধ ছিলো
তাই মামুন ঘুরতে বের
হয়েছে,,হঠাৎ মামুনের চোখ গেলো একটা ফুচকার দোকানের কাছে,,কালকের সেই ছেলেটার সাথে আরোহী বসে ফুচকা খাচ্ছে..মামুন দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছিলো..কিন্তু কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে আরোহী মামুনকে ডাক দিলো।।
মামুন যাবে না যাবে না করেও তাদের কাছে গেলো..
আরে মামুন সাহেব আপনি এসেছেন..আসুন বসুন ফুচকা খান..চিন্তা করবেন না আপনি যত ইচ্ছা খেতে পারেন আপনার দুলাভাই বিল দিবে..
আরোহীর কথা শুনে মামুনের প্রচণ্ড রাগ হলো..
কিন্তু তারপরেও বললো সত্যি দুলাভাই টাকা দিবে??
আরোহীঃদুলাভাই না দিলে আমি দিবো আপনি খান..
মামুনঃএই মামা প্রচুর ঝাল দিয়ে ফুচকা বানাতে থাকো তো..
আরোহীঃঝাল?আপনি না ঝাল খান না.
মামুনঃহুম খায়না,কিন্তু দুলাভাই এর টাকায়য় ফুচকা খাবো যদি ঝাল দিয়ে খাই অনেকদিন মনে থাকবে..আর এমনি খেলে কিছুদিনের মধ্যেই সেটা ভুলে যাবো
ফুচকা চলে আসছে মামুন খেতে শুরু করলো..
এতো ঝাল হয়েছে যে বলার বাইরে,,কিন্তু মামুন খেয়েই যাচ্ছে
এতোক্ষন আরোহী চুপ করে দেখছিলো.
কিন্তু মামুনের অবস্থা দেখে আর চুপ থাকতে পাড়লো না,,
এই তুমি কি শুরু করেছে এমনভাবে ঝাল খাচ্ছ কেনো?এই নাও পানি খাও..
মামুন কোনো কথা না বলে এর একপ্লেট নিয়ে বসলো ঝালের কারনে চোখ মুখ সব লাল হয়ে যাচ্ছে,,কিন্তুআ এই ঝালের কষ্ট অন্যসব কষ্টের কাছে কিছুই না,,তাই মামুনের কোনো রকম লাগছে না,,
৪র্থ প্লেট থেকে মাত্র দুইটা ফুচকা খেয়েছে
আর আরোহী এসে ফুচকার প্লেট ফেলে দিলো..
এই পাগল হয়ে গেছ?চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে কষ্ট হচ্ছে কিন্তু খেয়েই যাচ্ছে(আরোহী)
মামুন বললো দুলাভাই কিছু মনে করবেনন না,,একটু বেশি খেয়ে ফেলেছি..এই কথা বলেই মামুন চলে গেলো.
কি হলো তুমি এইভাবে কাঁদছ কেনো(ছেলে)
আরোহীঃও আমার উপর শুধু আমার উপর রাগ করে এমনভাবে ঝাল খেলো.আমি জানি ওর অনেক কষ্ট হয়েছে..
আরে তুমি তো এটাই চাইছিলে ওকে কষ্ট দিতে(আরোহীর কাধে হাত রেখে)
আরোহী ঝামটা মেরে হাত টা সড়িয়ে দিয়ে বললো একদম আমাকে ছুবে না বলে দিচ্ছি
আচ্ছা ছুবো না এখন বাসায় চলো..
আরোহীঃতুমি বাসায় যাও আমি পড়ে বাসায় যাবো।।
আচ্ছা আমি গেলাম,,,
আরোহী সেখান থেকে কোনো এক কারনে অনিদের বাসায় চলে গেলো..
মামুন বাসায় এসেইই শুয়ে পড়ছে..
পরদিন ভার্সিটিতে..
মামুন একাই বসে আছে ক্লাসে যেতে মন চাচ্ছে না,,
মামুন লক্ষ্য করলো সেই ছেলেটার সাথে আরোহী বাইকে করে আসছে..
ভালো করে লক্ষ্য করলো আরোহী ছেলেটার একদম গা ঘেঁষে বসে আছে।।
তাই মামুন অন্যদিকে নজর সরিয়ে নিল.
কিন্তু বজ্জাত দুইটা আর কোথায় না থেমে এসে থামলো মামুন যেখানে বসে ছিলো ঠিক সেখানে..
আরোহী ঝটপট নেমে বললো
আচ্ছা এখন তাহলে যাও,,ছুটি হলে আমি তোমাকে ফোন করে ডেকে নিবো.আজকে আমরা মুভি দেখতে যাবো..
ছেলেটা মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো..
মামুন কি করবে কিছুই ভেবে পাচ্ছে না,,ওকে শুনিয়ে কথাটা বললো সেটা মামুন বেশ ভালোই বুঝতে পাড়ছে,,
মামুন তিশাকে ফোন দিলো,,কারণ তিশাকে দিয়েই কাজ হবে মানে কাটা দিয়ে কাটা তোলা যাবে,
আরোহী একটু সামনে গেছে তখন চিল্লায় চিল্লায় বললোলো তিশা শুনো আজকে আমরা বিকালে মুভি দেখতে যাবো..
এই কথা শুনে আরোহী দাঁড়িয়ে গেছে,
আরে সত্যি বলছি আমি কি মিথ্যা বলতে পারি??আর তুমি আজকে ভার্সিটি আসলে না কেনো??
তোমাকে খুব মিস করছি
আসলে মামুন কাওকেই ফোন দেই নাই,,
আরোহী তো রেগে পায়ের নিচে একটা পুকুর বানিয়ে ফেলছে জুতা দিয়ে গুতিয়ে..
আরে কালো জামা পরে আসবে,,হ্যা আমার খুব প্রিয়,,আর আমি তো তোমাকে দেখছিলাম কালো জামাতে তোমাকে একদম পরিদের মত লাগে..
আরোহী আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না,,
মামুনের কাছে ফিরে এসে বললো এইই যে মিস্টার মামুন কথা বলবেন ভালো কথা,,কিন্তু আসতে বলতে পারেন না?
মামুনঃনাহ আমি আসতে কথা বলতে পারি না,,আর এখানে কেও নেই,,তাই আমি জোরে কথা বলছিলাম..
কিন্তু আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে আপনি আমার কথায় কান দিচ্ছিলেন..কিন্তু এইভাবে কারো কথায় কান দেওয়া অন্যায় সেটা আপনি জানেন না??
আরোহীঃনাহ আমি জানিনা,,,আর আপনি কার সাথে কোথায় কি করতে যাবেন তাতে আমার কিছুয় যায় আসে না..
মামুনঃআমি কি একবারো বলেছি আপনার যায় আসে
To Be Continue

কোন মন্তব্য নেই: