শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৯

ছোট সাহেব

গল্পঃছোট সাহেব [পর্বঃ ০১] শরীরে হাত দিচ্ছেন কেন? __ -ম্যাডাম.! আমি আর আপনাদের বাসায় কাজ করতে চাইনা। আপনি এই মাসের বেতন দিয়ে দিলে খুশি হতাম... (কাজের বুয়া) -কেন? আমি তো তোমাকে অন্য সব কাজের বুয়ার থেকে তোমাকেই বেশি বেতন দিতাম? (মা) . -না, ম্যাডাম! আমি আর কাজ করতে চাইনা।ভয় করে এই বাসায় কাজ করতে।আমার কিছু হলে মার কি হবে।সে এখনো অসুস্থ..(কাজের বুয়া) . -তুমি অনেক ভালো কাজ করতে পারো।সেজন্যই বলছি থাকতে।কোনো কারণ ছাড়াই কেন চলে যাবা? (মা) . -ছোট সাহেব আজ আমার কোমরে হাত রেখে পিছনে জোরিয়ে ধরেছিলো।সাহেবের নজর প্রথম থেকেই সুবিধার লাগছিলো না...(কাজের বুয়া) . -মজা করো না প্লিজ! আমার ছেলে সোহান একটু দুষ্টু বটে কিন্তু মোটেও এমন অসভ্য না।সোহান অনেক ভালো।সবাইকে শ্রদ্ধা করে...(মা) . -(দু'হাত খপকরে ধরে) বিশ্বাস করেন.! আমি মিথ্যা বলছিনা! প্রথম দিন আপনাদের বাসায় কাজের জন্য এসেছিলাম মনে পরে? (কাজের বুয়া) . -হ্যাঁ মনে আছে, কেন? (মা) . -আমার নোংরা কাপড় দেখে প্রথমেই কাজের জন্য মানা করে দ্যান..(কাজের বুয়া) . -তারপর তো আমার ছেলে কাজে নিতে বলল।তাই তো কাজে রেখে দিলাম।তখন তো খুশিই হয়েছিলে..(মা) . -ছোট সাহেব প্রথম দিনেই আমার বুকের দিকে চোখ দেয়।সেটা প্রথম থেকেই বুঝতে পারছি তার দিন দিন লোভ বারছে..(কাজের বুয়া) . -পুরুষ মানুষ লোভ দেখালে তো লোভ লাগবেই। শাড়ীর আঁচল ঠিক রাখতে পারো না..? (মা) . -আজব তো! নিজের ছেলের ভুল না ধরে, আমার ভুল ধরছেন।আর হ্যাঁ আঁচলটা ঠিকি ছিলো।তবুও আমি নড়েচড়ে ঠিক ভাবে দাড়িয়ে, গলা ঝারিয়ে কেঁশে আঁচল ঠিক করি।ছোট সাহেবের চোখ যেন সরছিলোই না ঢ্যাবঢ্যাব করে তাকিয়ে ছিলো, লুচ্চাদের মতো..(কাজের বুয়া) . --কিইইই্??? সম্পূর্ণ ঘটনা পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়ে বলো? আজ সকালে কি হয়েছে.. (মাধবীলতা) . -সকাল ১০টায় আপনি অফিসের কাজে চলে যান।তখন আমি দরজা হালকা চেপে দিয়ে একটু ঝুঁকে ঝাড়ু দিচ্ছিলাম আমার মনে ছিলো না শাড়ীর আঁচল পরে গেছে ,তখনি পিছন থেকে কেউ জোরিয়ে ধরে কোমরটা।তাকিয়ে দেখি ছোট সাহেব লজ্জায় মাথা নিচু করে বলি "ছোট সাহেব আপনি?" (কাজের বুয়া) . ছোট সাহেব তখন বলে... -কেমন লাগছে তোর? মাধবীলতা? . -শরীরে হাত দিচ্ছেন কেন? ছোট সাহেব? (কাজের বুয়া) . -মাধবী, তোকে আমি বিয়ে করে আমার বউ বানাবো।একটু আদর করতে দেনা প্লিজ।আমি তোকে অনেক ভালোবাসবো.. . -না, না আমার দরকার নেই এমন ভালোবাসার।কিছুদিন পর ঠিকি আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবেন, নয়তো বা মান-সম্মানের ভয়ে গলা টিপে মেরে ফেলবেন? (কাজের বুয়া) . -ওহহ্ মাধবী, আরো কাছে আসো।আই লাভ ইউ মাধবী! আই লাভ ইউ মাধবী! (ঘাড়ে গলায় একের পর এক চুমু দিয়ে) . -ছাড়েন, ভয় করছে যদি কেউ দেখে ফেলে.! তখন কাজ থেকে বের করে দিবে।আপনার কিছুই হবেনা, যত দোষ আমার উপর দিয়ে যাবে... (কাজের বুয়া) . -কোনো দোষ হবেনা।দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে দিয়েছি।কেউ দেখবে না, এখন শুধু তুই আর আমি ছাড়া পুরো বাসাটা ফাঁকা..(হেসে হেসে বলছে) . হাত দুমরে মুচরে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কাজের মেয়ে।পিঠের উপর উপচে পরে থাকা চুল গুলো। হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়ে পিঠে চুমু দিলো। গালে গাল ঘেষে বলে... . -তোর মাইনে বেরে দিব,আম্মুকে বলে।শুধু আমাকে একটু সময় দে।আমি তোকে অনেক ভালোবাসিরে মাধবী.. . -ছিঃ ছিঃ ছোট সাহেব আপনাকে তো ভদ্র ভাবতাম। কিন্তু আপনি..?কাজের মেয়ের সাথে কোনো বড়লোক দের প্রেম ভালো হয়না, ছাড়েন বলছি... (কাজের বুয়া) . -তোকে দেখলে কি ভদ্র থাকতে ইচ্ছা করে..! ইচ্ছা করে তোর ঠোঁট দুটো কামরে-চুষে খেয়ে ফেলি।আহহ্ গোলাপী ঠোঁট দেখেই লোভ ধরে যাচ্ছে।। . -ছোট সাহেব দয়া করে এই গরিবের মেয়ের এমন ক্ষতি করবেন না।আপনার দুটি পায়ে পরি।ছাড়ুন আমায়..? (কাজের বুয়া) . -যদি না ছাড়ি তাহলে কি করবি করেনে।আমি তোকে আর আজ ছাড়ছিনা (এক গাল হেসে) . থতমতো হয়ে তোঁতলাতে তোঁতলাতে বলে... -আ-আমি চিৎকার করে আশে-পাশের সব প্রতিবেশীদের জরো করবো, বলে দিলাম.. (কাজের বুয়া) . -তোর চিৎকার কেউ শুনতে পাবেনা।পারলে নিজের গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার কর তবুও তোকে ছাড়ছিনা..! . তারপর ছেলে আমার দুটো হাত শত্ত করে চেপে ধরে।পুরুষ মানুষের শক্তির কাছে নারীর শক্তি হেরে যায়। আমাকে দেওয়ালের সাথে সেটে ধরে।দু'হাতে চেপে ধরে দেওয়ালে আমি অনেক ছুটার চেষ্টা করি কিন্তু পারিনি। । ঠোঁট লাগিয়ে দিয়ে ছিঃ ছিঃ বলতেও লজ্জা করছে আমার।ভাগ্যিস প্রতিবেশীদের বাড়ি থেকে একটা মেয়ে "চিনি" নিতে এসেছিলো, তাই হয়তো বেঁচে গেছি? । মুখের উপর শক্ত হাতে চেপে ধরে আপনার ছেলে বলেছিলো "ভুলেও এসব কথা প্রতিবেশীর কাছে বললে তোর ব্যবস্থা আমি নিবো, মাইন্ড-ইট" শার্টের বোতাম ঠিক করতে করতে চলে গেলো ছোট সাহেব। আমি চোখের জল মুছে দরজা খুলে দিলাম। ' কাজের বুয়ার মুখ থেকে এমন একটা কথা শুনে, মা প্রথমে বিশ্বাস করছিলো না।যে ছেলেটা ভূতের গল্প পড়ে ভয় পেয়ে প্যান্ট নষ্ট করে দেয়.! । সে-কিনা একটা বস্তির অপরিষ্কার, নোংরা কাপড়-চপড় পরা মেয়ের উপর লোলুভ দৃষ্টিতে তাকাবে? বিশ্বাস হয়না! । -ম্যাডাম চুপ করে আছেন কেন?আমার বেতনটা দিয়ে দ্যান।ছোট সাহেব যদি কিছু করে বসে... (কাজের বুয়া) (ভয় ভয় কণ্ঠে বলে) . -সোহান এমন হতেই পারেনা।এসব নিয়ে দ্বিতীয় বার কথা উঠলে জেলার ভাত খাইয়ে ছাড়াবো তোকে! মনে থাকে যেন....(মাধবীলতা) . -কিন্তু..! (কাজের বুয়া) . কথার মাঝ খানেই থামিয়ে দিয়ে বলে... -আর একটা কথাও শুনতে চাইনা।কাল থেকে নিয়মিত কাজে আসবি...(মাধবীলতা) . মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ জবাব দেয়। গ্রামের মেয়ে এখানে এক বস্তিতে থাকে তার অসুস্থ মাকে নিয়ে।বাবা শখ করে নাম রেখেছিলে "মাধবীলতা"। । জন্মের ঠিক ৬ মাস পরেই যক্ষ্মা-রোগে মারা যায় তার বাবা।১২ বছর বয়সে মা অসুস্থ হয়ে বিছানায় পরে আছে।পেট বাঁচানোর দায়ে অন্যর বাড়িতে কাজ করা শুরু করে। ° এখন মাধবীলতার বয়স সাড়ে ১৬, পুলিশ তো বড় লোকদের হাতে চলে।আমাদের মতো নিম্ন ব্যক্তিদের কি সাহায্যর জন্য এগে আসবে? মন হয়না আসবে? এসব ভাবতে ভাবতে আবারও রুম পরিষ্কার করায় ব্যস্ত হয়ে গেলো।সন্ধ্যা হলেই যেন লম্বা একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে "আজকের মতো বাঁচে গেলাম" . মাধবীলতার মনের ভেতরের ভয়টা কুঁরে-কুঁরে খাচ্ছে তাকে।আজ না হয় প্রতিবেশীর জন্য বেঁচে গেলাম কাল কি করব? কাল যদি আবারও ছোট সাহেব খারাপ কিছু আবদার করে তখন? এসব ভাবতে ভাবতেই মাধবীলতা বুক ফাঁটা কান্না ভেঙ্গে পরে। পরদিন সকালে উঠে নিজের মাকে খাইয়ে দিয়ে মাধবীলতা কাজে উদ্দেশে বের হয়।দরজায় কলিংবেল চাপলো মাধবীলতা।দরজা খুলে বলল... । -ওহ তুই এসেছি তাহলে? আজ এত দেড়ি করার কারণটা কি?? (মা) . -ম্যাডাম, মাকে খাইয়ে দাইয়ে দিতেই একটু বেশি দেড়ি হয়ে গেছে।কাল থেকে আর দেড়ি হবেনা (মাধবীলতা) হেসে হেসে কথা গুলো বলে.. । -আচ্ছা ঠিক আছে,কাপড় গুলো ময়লা হয়ে গেছে একটু ভালো করে ধুয়ে দিস, আমি অফিসে চলে যাচ্ছি!" (মা) . -জ্বী আচ্ছা ম্যাডাম।আপনে কোনো চিন্তা কইরেন না।আমি সব কাজ করে দেবো (মাধবীলতা) মাধবীলতা সবার ম্যাডামের রুম পরিষ্কার করে ছোট সাহেবের রুমে ঢুকলো।রুমে ঢুকেই লজ্জায় মুখ লাল হয়ে যায় মনে মনে বলল "ছোট সাহেব কত নোংরা পড়ার টেবিলেও মেয়েদের ম্যাগাজিন!" কাল সেই ঘটনার কথা মনে পরে আত্মা কেঁপে উঠে।পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন -চলবে????

কোন মন্তব্য নেই: