বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯

দেমাগি মেয়ের অপমান

২য় পর্ব লেখকঃমো আসাদ রহমান দরজা লাগিয়ে আমি দুইকানে হেডফোন গুজে গান শুনতে লাগলাম জানি আব্বু ডাকছে কিন্তু আমি শুনবো না।প্রায় ১২টার দিকে বের হলাম রুম থেকে খুন খিদে পেয়েছে খেতে হবে নাহলে আমি মারা যাবো।আর আমি মারা গেলে নিতুর আব্বু হবে কে?বের হয়ে প্রথমে ফ্রেশ হলাম তারপর আম্মুকে বললাম খেতে দিতে।আম্মু বললো তোর আজ খাওয়া বন্ধ,,মানে তোর আব্বু যতক্ষন বাসায় না আসছে ততক্ষন তুই খেতে পারবি না... আমিঃকেনো আম্মু এই রকম।অবরোধ কেনো দিয়েছে?? আম্মুঃসেটা তোর আব্বু আসলে তোর আব্বুর কাছ থেকেই যেনে নিবি কেমন?? আমিঃআম্মু আমার তো খুব খিদে পেয়েছে... আম্মু;আমি কিছু করতে পারবো নাহ... কি আর করার এখন বন্ধুদের বাসাই ভরসা গেলাম নাজমুলের বাসায় কিন্তু একি নাজমুলের উপরো অবরোধ?? এরপর রাফি একই অবস্থা আমার সব বন্ধুদের উপর অবরোধ আরোপ করা হয়েছে আর সেটা করেছে যার যার আব্বু এ কেমন বিচার।সবাই মিলে রেস্টুরেনন্টে খেতে গেলাম।খেয়ে দেয়ে পেট শান্ত করে একটু ঘুরে ২টার দিকে বাসায় আসলাম।। বাসায় এসে দেখি আব্বু অনেক আগেই বাসায় এসে গেছে। আব্বুঃকিরে এতোক্ষন কোথায় ছিলি?? আমিঃএইতো একটু ঘুরে এলাম। আব্বুঃকিছু খেয়েছিস। আমিঃনাহ আব্বু কিছু খাওয়া হয়নায়(ডাহা পড়া মিথ্যা কথা) আব্বুঃমিথ্যা বলে লাভ না আমি তো দেখেছি তোরা সবাই মিলে মন্টুর হোটেলে গিয়ে পেট পুরে খেয়ে এসেছিস এখন মিথ্যা বলছিস কেনো? এইরে আব্বু ধরে ফেলেছে ভাবছিলাম মিথ্যা কথা বললে আব্বুর মন একটু নরম হবে কিন্তু তা না উল্টো মিথ্যা কথা বলে আব্বুকে আরো রাগিয়ে দিয়েছি মনে হয়। আব্বুঃশুন যা করেছিস তার জন্য আমাদের সামনে দুইটা রাস্তা খোলা আছে প্রথম রাস্তা হয় আমাদের এই গ্রাম ছাড়তে হবে নাহলে তোকে দৃষ্টিকে বিয়ে করতে হবে। আমিঃআব্বু আমি অই মেয়েকে বিয়ে করতে পারবো না। আব্বুঃকেনো কি করেছে অই মেয়ে? আমিঃআব্বু তুমি দেখো নাই অই মেয়ে কত ছোট ছোট জামা কাপড় পরে।আমার এই রকম।মেয়ে চাই না আমি এমন একটা মেয়ে চাই যে সাধারণ একটা মেয়ের মত থাকবে।আর অই মেয়ে আমাকে অকারনে অপমান করেছিলো তাই আমি অই মেয়েকে বিয়ে করতে চাই না আব্বু। আব্বুঃতাহলে আর কি আমাদের এই গ্রাম ছাড়তেই হবে। নাহ আব্বু আমরা এই গ্রাম ছেড়ে কোথাও যাবো না। আব্বুঃতাহলে তো অই মেয়েকে তোকে বিয়ে করতেই হবে। আমিঃআব্বু অই মেয়ে মেয়ের বাবা মা তোমারা কি রাজি?? আব্বুঃহ্যা আমরা সবাই রাজি শুধু তুই রাজি হলেইই শুভ কাজ সেরে ফেলবো। আমিঃআব্বু আমি অই মেয়েকে বিয়ে করতে পারি।যদি অই মেয়ে সাধারণ মেয়ের মত থাকতে পারে।আর যদি অই সবার সামনে আমাকে এসে সরি বলে তবেই আমি অই মেয়েকে বিয়ে করবো।। আব্বুঃবাবা শুন অই মেয়েকে তুই যা বলবি তাই করবে কিন্ত তবুও তুই অই মেয়েকে বিয়ে করে নে বাবা। আমিঃআচ্ছা আব্বু তোমরা যেহেতু রাজি তাহলে আমিও রাজি। আব্বুঃএই নাহলে আমার ছেলে তাহলে বাবা এবার নিজেকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত করো।আর আমি দৃষ্টির আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে দেখি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে দিয়ে যে রটনা রটছে সেটা দূর করবো।আর যাও এইবার খেতে যাও,, আমিঃআচ্ছা আব্বু যাচ্ছি আব্বুঃহুম যাও আর এখন থেকে দুষ্টুমি একটু কম করো মনে রেখো দুইদিন পর তুমি কারো স্বামী হবে তোমার কাধে অন্য এক্টা দায়িত্ব আসবে। আমিঃআচ্ছা আব্বু তুমি যা বলবে তাই করবো। এরপর আব্বু আরো কিছু কথা বলে চলে গেলো।আর আমিও খেতে চলে গেলাম।তার আগে বলে রাখি আমি এই সময় বিয়ে করতে চাইছিলাম না কিন্তু এতো কিছুর পর আমি আর না করতে পাড়লাম না আমার জন্য আমার পরিবারকে গ্রাম ছাড়া হতে হবে সেটা আমি মানতে পারবো না তার থেকে ভালো বিয়ে টা করেই নেই।আজ হলেও বিয়ে করতে হবে কাল হলেও বিয়ে করতে হবে।যদিও দৃষ্টিকে আমার একদম ভালো লাগে না কিন্তু আব্বু আম্মু মান রক্ষার জন্য আমি বিয়েতে মত দিয়েছি। খাওয়া দাওয়া শেষ করে শুয়ে আছি তুখন অচেনা একটা নাম্বার থেকে কল আসে।আমি কিছু না ভেবেই কল রিছিভ করলাম আমিঃহ্যালো কে বলছেন? ওপাশ হতে;আমি তোমার বউ বলছি (মেয়ে) আমিঃঅই ফাজলামি করেন?আমি বিয়ে করলাম কবে যে আপনি আমার বউ হবেন? মেয়েঃআরে এখনো পুরোপুরি হয়নাই কিন্তু হবো এটা সিউর। আমিঃকে আপনি প্লিজ বলুন মেয়েঃআমি দৃষ্টি এবার চিনেছো? আমিঃহ্যা চিনেছি,তা আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায়। দৃষ্টিঃ আমার শশুর মশাইয়ের কাছ হতে নিয়েছি। আমিঃমানে? দৃষ্টিঃ মানে তোমার আব্বুর কাছ থেকে নিয়েছি.. আমিঃতা এর মধ্যে আমার আব্বুকে শশুর মশাই বানিয়ে নিয়েছেন?? দৃষ্টিঃ হ্যা নিয়েছি... আমিঃভালো তা কি জন্য ফোন করেছেন সেটা বলেন? দৃষ্টিঃ তোমার ইচ্ছা গুলো পুরন করার জন্য... আমিঃ?????? দৃষ্টিঃ অই যে তুমি নাকি কিছু শর্ত দিয়েছো সেগুলো পুরন করবো এখন তাড়াতাড়ি নদীর ধারে আসো আমি অপেক্ষা করছি। আমি ভাবলাম নাহ মেয়েটা যেহেতু দেখা করতে বলছে আমি দেখা করি দেখি কেমন ইচ্ছা পূরণ করতে পারে। আমিঃআচ্ছা আর একটু অপেক্ষা করুন আমি আসছি.. দৃষ্টিঃ তাড়াতাড়ি আসো এরপর কল কেটে গেলো আমি নদীর ধারে গিয়ে দেখি কেও একজন নীল শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে আছে। আমি পেছন থেকে গিয়ে বললাম দৃষ্টি নাকি? মেয়েটা আমার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। দৃষ্টিঃ অই হাদারাম নিজের হবু বউকে চিনো না? আমিঃনাহ মানে? দৃষ্টিঃ হয়ছে আর মানে মানে করতে হবে না।দেখো তোমার ইচ্ছা পূরণ করেছি।আর হ্যা সেদিনের ব্যাবহারের জন্য আমি সরি। আমি দৃষ্টির দিকে ভালো করে লক্ষ্য করে দেখি নীল শাড়ীতে দৃষ্টিকে বেশ দারুন লাগছে ঠিক যেনো একটা নীল পড়ি।আমি তো দৃষ্টিকে নতুন রুপে দেখে দৃষ্টির প্রেমে পড়ে গেলাম। দৃষ্টিঃ কি হলো অমন করে কি দেখছো?? আমিঃনাহ কিছু না তোমাকে না অনেক সুন্দর লাগছে।। দৃষ্টিঃ এই চলো না একটু তোমার সাথে গ্রাম ঘুরে বেড়াবো... আমিঃকিন্তু লোকে দেখলে কি বলবে বলো বিয়ের আগেই এইভাবে ঘুরাঘুরি ঠিক হবে?? দৃষ্টিঃ কে কি বললো সেটা আমার দেখার বিষয় নাহ।এখন তুমি আমার সাথে ঘুরতে বের হবে এটাই ফাইনাল আমি আর কি বলবো আমিও রাজি হয়ে গেলাম তারপর দুজন অনেক ঘুরাঘুরি করলাম।।সন্ধ্যার সময় দৃষ্টিকে বাসায় দিয়ে আমি বাসায় এসে পড়লাম এসে শুনি আগামি সপ্তাহে নাকি আমার আর দৃষ্টির বিয়ে।এতো তাড়া কেনো? আগে তো একটু সময় দিবে দুজন দুজনকে একটু বুঝার জন্য কিন্তু তা না তার আগেই দুজনকে বিয়ে দিয়ে দিবে।যাক বিয়ের পর বুঝে শুনে নিবো। মাঝখানে কি হলো সেটা আর বললাম না বিয়ে করে বউ বাসায় নিয়ে আসছি।সবাই নতুন বউ নিয়ে ব্যাস্ত,যার জন্য বাসায় নতুন বউ আসলো তার কোনো খোজ কেও নেই না।আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ছাদে গেলাম। একবন্ধু বললো মামা আজকে কিন্তু বিড়াল মারা চাই। আমিঃবিড়াল মারা কিরে,জানিনা? রাফিঃশালা তোকে জানতেও হবে না।অনেক রাত হয়ে গেছে যা এবার বাসর ঘরে যা। তারপর বন্ধুদের ধাক্কা খেয়ে আমি বাসর ঘরে প্রবেশ করলাম।দেখি দৃষ্টি ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।আমি দৃষ্টির পাশে যখন যেতে লাগলাম তখন দৃষ্টি বললো এই একদম আমার কাছে আসবে না বলে দিলাল।। আমিঃকেনো কাছে যাবো না কেনো? দৃষ্টিঃ আমি বলছি তাই আসবা না, আমিঃএই আজকে না আমাদের বাসর রাত,বাসর রাতের কাজ সেরে চলো ঘুমিয়ে পড়ি। দৃষ্টিঃ এই শুনো না আমার শরীর টা একদম ভালো নেই।আমি আজ পারবো না।আর শুনো আমার একা ঘুমানোর অভ্যাস। তুমি এক কাজ করো অই সোফায় ঘুমিয়ে পরো। আমিঃকিন্তু আমি তো বিছানা ছাড়া ঘুমাতে পারি নাহ। দৃষ্টিঃ প্লিজ একটু কষ্ট করো।কিছুদিন পর যখন একে অপর কে ভালোভাবে চিনবো জানবো তখন না হয় একসাথে থাকবো কিন্তু এখন প্লিজ তুমি শোফায় ঘুমাও আমার খুব ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো। আর কি করার আমি শোফায় শুয়ে পড়লাম। দুঃখ একটা আমার নতুন ইতিহাস তৈরি করা হলো নাহ।কেও আমারে সমবেদনা জানাও আমার বাসর হলো নাহ😭😭😭.শোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম নতুন বিয়ে করলাম কই বউ একটু আদর সোহাগ করবে তা না দিলো সোফায় পাঠিয়ে ভালো লাগে না ধুর।কিন্তু আমার বউ তো বলে দিয়েছে কিছুদিন পর যখন একে অপরকে ভালো করে চিনবো তখন নাকি একসাথে থাকবো আহা মজাই মজা ইতিহাস সৃষ্টি করবো☺☺☺☺ রাতটা কোনো ভাবে পাড় করলাম সকালে কে জেনো দরজা ধাক্কা দিচ্ছে,, দৃষ্টি আমাকে বলে দেখো তো গিয়ে কে দরজা ধাক্কাচ্ছে?? আমিঃআমি কেনো যাবো তুমি যেতে পারো নাহ। দৃষ্টিঃ আরে যাও না আমার শরীর ভালো নাহ,, আমিঃআচ্ছা যাচ্ছি, দরজা খুলে দেখি আমার কিছু ভাবি দাঁড়িয়ে আছি। ভাবিঃকি ব্যাপার ভাইয়া রাত কেমন কাটলো আমিঃভালোই কেটেছে... ভাবি'বাসর রাতে বিড়াল মেরেছো?? আমি……………… ভাবিঃতা নতুন বউ কোথায়? আমিঃশুয়ে আছে। ভাবিঃবাহ বাহ বাসর রাতে মনে হয় বিড়াল ভালোই মেরেছো বউ বিছানা ছেড়ে উঠতেই পারছে নাহ। আমিঃনাহ ভাবি তা না ভাবিঃহয়ছে হয়ছে আর কিছু বলতে হবে না আমরা সব কিছু বুঝি...... আমিঃধুর ভাবি তোমরা যা ভাবছো তা কিছুই হয়নাই। ভাবিঃযাও গিয়ে নতুন বউকে ডেকে তুলো গোসল করে নিচে আসতে বলো নতুন বউকে দেখতে অনেক মানুষ আসবে। আমিঃআচ্ছা ভাবি ঠিক আছে, ভাবিঃহুম তাড়াতাড়ি করতে বলো কেমন? আমিঃআচ্ছা তারপর ভাবি চলে গেলো আমি গিয়ে দৃষ্টিকে ডাকতে লাগলাম দৃষ্টি এই দৃষ্টি উঠো তা দৃষ্টিঃ উম উঠবো পড়ে। নাহ তোমাকে এখুনি উঠতে হবে দৃষ্টিঃ এই তোর প্রব্লেম টা কি শুনি এইভাবে কানের কাছে ভ্যা ভ্যা করছিস কেনো?? আমিঃএই তুমি এমন ভাবে কথা বলছো কেনো? তখন দৃষ্টি লাফ দিয়ে উঠে বললো সরি বাবু আসলে আমার ঘুম পুরোপুরি হয়নাই আর তুমি বার বার আমাকে ডাকছিলে তাই অমন ভাবে কথা বলেছি।সরি হা কিছু মনে করো না? আমিঃযাও ফ্রেশ হয়ে নিচে যাও সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। তারপর দৃষ্টি ফ্রেশ হতে চলে গেলো আর আমি ছাদে চলে গেলাম তারপর অনেক কিছু হলো সেগুলো বাদ দিলাম বিয়ের ৭ দিন পর দৃষ্টি আমাকে বলে তার সাথে নাকি ঢাকায় তার বাসায় যেতে হবে। দৃষ্টিঃ এই শুনো তোমাকে আমার সাথে ঢাকা গিয়ে থাকতে হবে আর সেখানেই কাজ করতে হবে।কতদিন আর বেকার বসে থাকবে। আমিঃকিন্তু আব্বু আম্মু ভাইয়া ভাবিকে ছেড়ে কিভাবে দূরে গিয়ে থাকবো? দৃষ্টিঃ আমার জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ এর জন্য হলেও যেতে হবে। আমিঃকিন্তু আব্বু আম্মুকে কিভাবে রাজি করাবো তাড়া তো রাজি হবে না... দৃষ্টিঃ তাদের রাজি করাবার দায়িত্ব আমার। আমিঃআচ্ছা তাহলে বলে দেখো তারা কি বলে। দৃষ্টি এরপর আব্বু আম্মু কাছে চলে গেলো জানিনা কি মন্ত্র দিয়েছিলো আব্বু আম্মু এক কথায় রাজি হয়ে গেলো। তারপর সেদিনি আমাকে ঢাকা আসতে হয়েছিলো দৃষ্টি চাইছিলো তাই আব্বু আম্মু আর না করতে পারে নাই। চলবে

কোন মন্তব্য নেই: